Important information about land deeds and land.

https://www.teckpas.com/

🏕 জমির দলিল ও ভূমি সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।

🏞  প্রিয় জমি পরিমাপের হিসাব জানা কতটা দরকারি যে সমস্যায় পড়ে সে বুঝতে পারবে। জমি পরিমাপের হিসাব সবার জানা থাকা প্রয়োজন। সম্পত্তি যার নাই তার যেমন আপসোস তেমনি যার আছে তার মাথা ব্যথা কম নয়। সঠিক হিসাব না জানলে নিজের জমিও অন্যের হয়ে যেতেপারে। যার জমি বা বাড়ি আছে তার জায়গা জমির হিসাবটা জানা জরুরী। আবার যার জমি নাই তার জমি হতে কতক্ষন, কাজেই তারও এই হিসাবটা জানা দরকার।

🏕 ভূমি সংক্রান্ত যাবতীয় দলিল লিখন, সরকারি হিসাব ও অফিসের কাজে ব্যবহার্য দুই প্রকার পরিমাপ হলো শতাংশের হিসাব ও কাঠা'র হিসাব। এই দুইয়ের মধ্যে সম্পর্ক এই যে, এক একরের এক শত ভাগের এক ভাগকে বলা হয় "এক-শতাংশ" জমি। অধিকতর প্রচলিত শব্দবন্ধ হলো "এক ডেসিমাল জমি"। অন্যদিকে কাঠার উর্ধ্বতর একক হলো "বিঘা" এবং বিঘা'র উর্ধ্বতর একক হলো "একর।" ২০ কাঠা সমান এক বিঘা জমি এবং তিন বিঘা সমান এক একর জমি। এই পরিমাপ সর্বজনীন, এবং "প্রমান মান" (Standard Measurement) হিসেবে সরকারীভাবে অনুমোদিত। তবে আন্তর্জাতিক প্রয়োজনে কখনো কখনো সরকারী কাগজে হেক্টর ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই নিবন্ধে আমরা দলিলের কিছু গুরুত্বপূর্ণ অংশ নিয়ে আলোচনা করবো।

🏕 খতিয়ান'' কি?  ''সি এস খতিয়ান'' কি?  ''এস এ খতিয়ান'' কি?   ''আর এস খতিয়ান'' কি?  ''বি এস খতিয়ান'' কি?  “দলিল” কাকে বলে?  “খানাপুরি” কাকে বলে?   ''নামজারি'' কাকে বলে ?  “তফসিল” কাকে বলে?  “দাগ” নাম্বার/''কিত্তা'' কাকে বলে?  “ছুটা দাগ” কাকে বলে?  ''পর্চা'' কাকে বলে ?  ''চিটা'' কাকে বলে ?  ''দখলনামা'' কাকে বলে ?  “খাজনা” ককে বলে? ''বয়নামা'' কাকে বলে ?  ''জমাবন্দি'' কাকে বলে ? ''দাখিলা'' কাকে বলে ?  ''DCR'' কাকে বলে? “কবুলিয়ত” কাকে বলে ?  “ফারায়েজ” কাকে বলে? “ওয়ারিশ” কাকে বলে?  ''হুকুমনামা'' কাকে বলে ? ''জমা খারিজ'' কাকে বলে ?  ''মৌজা'' কি/ কাকে বলে ? “আমিন” কাকে বলে?  “কিস্তোয়ার” কাকে বলে? “সিকস্তি” কাকে বলে ?   “পয়ন্তি” কাকে বলে? হোল্ডিং নম্বর কি?।

Table of Contents

🏕 খতিয়ান।

জমি পরিমাপ পদ্ধতি মৌজা ভিত্তিক, এক বা একাধিক ভূমি মালিকের ভূ-সম্পত্তির বিবরণ সহ যে ভূমি রেকর্ড জরিপকালে প্রস্তুত করা হয় তাকে খতিয়ান বলে। এতে ভূমির মালিকের নাম ও প্রজার নাম, জমির দাগ নং, পরিমাণ, প্রকৃতি, খাজনার হার ইত্যাদি লিপিবদ্ধ থাকে।

আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরনের খতিয়ানের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। তাহাদের মধ্যে সিএস, এসএ এবং আরএস উল্লেখযোগ্য। ভূমি জরিপকালে ভূমি মালিকের মালিকানা নিয়ে যে বিবরণ প্রস্তুত করা হয় তাকে “খতিয়ান”বলে। খতিয়ান প্রস্তত করা হয় মৌজা অনুসারে।

🏕 সি এস খতিয়ান।

জমি পরিমাপ পদ্ধতি সরকারি আমিনগণ প্রতিটি ভূমিখণ্ড পরিমাপ করে উহার আয়তন, অবস্থান ও ব্যবহারের প্রকৃতি নির্দেশক মৌজা নকশা এবং প্রতিটি ভূমিখন্ডের মালিকের বিররণ সংবলিত যে খতিয়ান তৈরি করা হয় তা সিএস (C.S) খতিয়ান নামে পরিচিত।

🏕 এস এ খতিয়ান।

জমি পরিমাপ পদ্ধতিতে জমিদারি অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন পাসের পর সরকার জমিদারি অধিগ্রহণ করেন। তৎপর সরকারি জরিপ কর্মচারীরা সরেজমিনে মাঠে না গিয়ে সিএস খতিয়ান সংশোধন করে যে খতিয়ান প্রস্তুত করেন তা এস এ (S.A) খতিয়ান নামে পরিচিত। কোনো অঞ্চলে এই খতিয়ান আর এস খতিয়ান নামেও পরিচিত। 

🏕 আর এস খতিয়ান।

জমি পরিমাপ পদ্ধতি বা একবার জরিপ হওয়ার, পর তাতে উল্লেখিত ভুলত্রুটি সংশোধনের জন্য পরবর্তীতে যে জরিপ করা হয় তা আরএস (R.S) খতিয়ান নামে পরিচিত। দেখা যায় যে, এসএ জরিপের আলোকে প্রস্তুতকৃত খতিয়ান প্রস্তুতের সময় জরিপ কর্মচারীরা সরেজমিনে তদন্ত করেনি। তাতে অনেক ত্রুটি-বিচ্যুতি রয়ে গেছে। ওই ত্রুটি-বিচ্যুতি দূর করার জন্য সরকার দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরেজমিনে ভূমি মাপ-ঝোঁক করে পুনরায় খতিয়ান প্রস্তুত করার উদ্যোগ নিয়েছেন। এই খতিয়ান আরএস খতিয়ান নামে পরিচিত। সারাদেশে এখন পর্যন্ত তা সমাপ্ত না হলেও অনেক জেলাতেই আরএস খতিয়ান চূড়ান্তভাবে প্রকাশিত হয়েছে।

সরকারি আমিনরা মাঠে গিয়ে সরেজমিনে জমি পরিমাপ করে এই খতিয়ান প্রস্তুত করেন বলে তাতে ভুলত্রুটি কম লক্ষ্য করা যায়। 

🏕 বি এস খতিয়ান।

1990 সাল হতে বর্তমানে চলমান জরিপকে বি, এস খতিয়ান বা সিটি জরিপ বলে। যা এখনো চলমান। জমি পরিমাপ পদ্ধতি সর্ব শেষ এই জরিপ।

🏕 দলিল কি?

দলিল বলতে যে কোন চুক্তির লিখিত ও আইনগ্রাহ্য রূপ বোঝায়। তবে বাংলা ভাষায় সম্পত্তি, বিশেষ করে জমি-জমা ক্রয়-বিক্রয়, বণ্টন এবং হস্তান্তরের জন্য ‘দলিল’ শব্দটি বিশেষভাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। দলিলের পাঁচটি মৌলিক তথ্য হলো: (ক) সম্পত্তির বর্ণনা, (খ) দাতার পরিচয়, (গ) গ্রহীতার পরিচয়, (ঘ) সাক্ষীদের পরিচয় এবং (ঙ) দলিল সম্পাদনের তারিখ। দলিল সম্পাদনের পর সরকারের মনোনীত কর্মকর্তা কর্তৃক নিবন্ধনের বিধান রয়েছে। এতে দলিলের আইনি বৈধতা দৃঢ়তর হয়। দলিল সম্পাদনের জন্য সরকারকে রাজস্ব দিতে হয়।

জমি-জমা ক্রয়-বিক্রয় এবং হস্তান্তরের জন্য দলিল শব্দটি বিশেষভাবে ব্যবহৃত হলেও যে কোনও চুক্তির ক্ষেত্রে দলিল শব্দটি প্রয়োগ করা যায়। বিয়ের কাবুলনামা, যুদ্ধের আত্মসমর্পণ চুক্তি, ক্রয়ের জন্য লিখিত কার্যাদেশ, আদালতের আদেশনামা ইত্যাদিও দলিল পর্যায়ভুক্ত।

🏕 সাফকবালা দলিল।

কোন ব্যক্তি তাহার সম্পত্তি অন্যের নিকট বিক্রয় করে যে দলিল সম্পাদন ও রেজিষ্ট্রী করে দেন তাকে সাফকোবলা বা বিক্রয় কোবলা বা খরিদ কোবলা বলে। এই কোবলা নির্ধারিত দলিল ষ্ট্যাম্পে লিখার পর দলিল দাতা অর্থাৎ বিক্রেতা সাবরেজিষ্ট্রী অফিসে উপস্থিত হয়ে দলিল সহি সম্পাদন করে গ্রহিতা অর্থাৎ খরিদ্দারের কে রেজিষ্ট্রী করে দিবেন। এই দলিল রেজিষ্ট্রী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দলিলের তফসিলে লিখিত অর্থাৎ বিক্রিত জমির যাবতীয় স্বত্ব দলিল দাতা হতে বিলুপ্ত হবে এবং দলিল গ্রহিতাকে অর্থাৎ যে কিনবে তার উপর অর্পিত হবে।

🏕 দলিলকে কোবলা বা কবলা কেন বলে?

আরবি ক’বুল থেকে উদ্ভূত কবালা [আ.ক’বুল+আ] অর্থ ক্রিয়াবিশেষ্যে স্বীকার করা, অঙ্গীকার করা; বিশেষণে অঙ্গীকার করা হয়েছে এমন, স্বীকার করা হয়েছে এমন, কবুল করা হয়েছে এমন, রাজি হয়েছে এমন এবং বিশেষ্যে অঙ্গীকার, স্বীকার, রাজি। যেহেতু, দলিলের মাধ্যমে দলিলদাতা কোনো বিষয় স্বীকার করেন, অঙ্গীকার করেন বা রাজি হন, কবুল করেন এবং দলিল হচ্ছে ওই স্বীকার রাজি, কবুল বা অঙ্গীকারের গ্রাহ্য প্রমাণ, তাই দলিলের অপর নাম কবালা। এটি কবলা বা কব্‌লা নামেও পরিচিত।

 🏕 দানপত্র দলিল কাকে বলে?

যে কোন সম্প্রদায়ের যে কোন ব্যক্তি তার সম্পত্তি দান করতে পারেন। এই দানপত্র দলিলে শর্তবিহীন অবস্থায় সকল প্রকার ক্ষমতা প্রদানের দান করতে হবে। স্বত্ব সম্বন্ধে দাতার কোন প্রকার দাবী থাকলে দানপত্র শুদ্ধ হবে না।

🏕 হেবা দলিল কাকে বলে?

মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য এই হেবা অর্থাৎ দানপত্র দলিল। এই দলিল কোনকিছুর বিনিময়ে নয়, কেবলমাত্র সন্তুষ্ট হয়েই এইরূপ দান করা হয়। কিন্তু এই হেবা শর্তবিহীন অবস্থায় দান যা বিক্রয়, রূপান্তর ইত্যাদি সকল ক্ষমতা প্রদানে দান বা হেবা করতে হবে।

স্বত্ব সম্বন্ধে দাতার কোনরূপ দাবী থাকলে সেই দান বা হেবা শুদ্ধ হবে না এবং তা যে কোন সময় বাতিলযোগ্য। এরূপ দানপত্রে দাতার কোন স্বার্থ সংরক্ষিত থাকবে না।

🏕 এওয়াজ দলিল কাকে বলে?

যে কোন সম্প্রদায়ের বা একই সম্প্রদায়ের বা একই বংশের বা কোন ব্যক্তি যে কোন ব্যক্তির সহিত তাহাদের সুবিধা মত একের ভূমি অপরকে দিতে পারেন। অর্থাৎ পরস্পর এওয়াজ পরিবর্তন সারতে পারেন। এই দলিল অবশ্যই রেজিষ্ট্রী হতে হবে।

🏕 বন্টননামা দলিল কাকে বলে?

শরিকগণের মধ্যে সম্পত্তি ক্রমে নিজ নিজ প্রাপ্ত ভূমির অংশ বাবদ যে দলিল করতে হয় তাকে বন্টননামা দলিল বলে। একই সম্পত্তিতে মালিক একই বংশের লোককে সাধারণত শরিক বলা হয়।

শরিক দুই প্রকারের, যথা- উত্তরাধিকার সূত্রে শরিক ও কোন শরিক হতে খরিদ সূত্রে শরিক। বন্টননামা দলিল করার সময় সকল শরিকগণ দলিলে পক্ষভুক্ত থেকে ও দস্তখত করে বন্টননামা দলিল করতে হবে। কোন একজন শরিক বাদ থাকলে বন্টননামা শুদ্ধ হবে না।

বন্টননামা দলিল রেজিষ্ট্রী করতে হবে, কিন্তু ঘরোয়াভাবে বন্টন করে সকল পক্ষগণ যদি বন্টননামা দলিলে দস্তখত করে থাকেন তা হলেও বন্টননামা কার্যকরী হতে পারে। যদি শরিকগণ আপোষ মতে বন্টন করতে রাজী না হন তাহলে যে কোন শরিক বন্টনের জন্য আদালতে নালিশ করতে পারেন।

🏕 হুকুমনামা কাকে বলে?

জমি পরিমাপ পদ্ধতি তে আমলনামা বা হুকুমনামা বলতে জমিদারের কাছ থেকে জমি বন্দোবস্ত নেয়ার পর প্রজার স্বত্ব দখলের প্রমাণের দলিলকে বুঝায়। সংক্ষেপে বলতে গেলে জমিদার কর্তৃক প্রজার বরাবরে দেয়া জমির বন্দোবস্ত সংক্রান্ত নির্দেশপত্রই হুকুমনামা বলে।

🏕 অছিয়তনামা দলিল কাকে বলে?

যদি কোন ব্যক্তি তার সম্পত্তি (জমি জমা) কাউকে বা তার উত্তরাধিকারীদের সকলকে না দিয়ে যদি অন্য  একজনকে বা কোন তৃতীয় ব্যক্তিকে অথবা অছিয়তকারী ব্যক্তির উত্তরাধিকারীদের মধ্যে একজনকে প্রদান করে থাকেন এবং অছিয়তকারীর মৃত্যুর পর যদি তাহার উত্তরাধিকারীগণ দাবী উত্থাপন করেন তাহলে যাকে সম্পত্তি অছিয়ত করা হলো সেই ব্যক্তি উক্ত সম্পত্তির এক তৃতীয়াংশ পাবে এবং অবশিষ্ট দুই তৃতীয়াংশের মালিক উত্তরাধিকারীদের মধ্যে সকলেই হবেন।

🏕 উইল দলিল কাকে বলে?

হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক তাদের নিজস্ব সম্পত্তি তাদের আত্মীয়দের মধ্যে যাকে ইচ্ছা উইল করে দিতে পারেন। যিনি উইল করেন তিনি একের অধিক উইল করতে পারেন। কিন্তু সর্বশেষ যে উইল করলে কেবল সেটাই কার্যকরী হবে।

🏕 নাদাবী দলিল কাকে বলে?

কোন ব্যক্তি সুনির্দিষ্ট কোন সম্পত্তিতে তার স্বত্ত্বাধিকার নাই মর্মে অথবা স্বত্ত্বাধিকার ত্যাগ করছেন মর্মে দলিল সম্পাদন ও রেজিষ্ট্রী করে দিতে পারেন। এরূপ দলিলকে নাদাবী দলিল বলা হয়।

🏕 বয়নামা দলিল কাকে বলে?

প্রজাদের ভূমি রাজস্ব বাকী পড়লে মালিকগণ আদালতে খাজনার নালিশ করেতেন। প্রজা উক্ত টাকা জমিদারকে প্রদান না করলে উক্ত খাজনার ভিত্তিতে উক্ত ভূমি নিলাম করাতেন। উক্ত নিলামে মালিকসহ সর্ব সাধারণের খরিদ করার অধিকার থাকে।

যে ব্যক্তি অধিক টাকায় নিলামের ডাক উঠাতেন তিনি উক্ত নিলাম খরিদ্দার বলে গণ্য হবেন। খাজনার টাকা ছাড়া আরও কয়েক প্রকারের নিলাম হয়ে থাকে। যিনি নিলাম খরিদ করতেন তাকে একটি নিদর্শন পত্র বা সার্টিফিকেট পাবেন,সেটাকেই বয়নামা দলিল বলা হয়।

🏕 দখলনামা দলিল কাকে বলে?

বন্টনের মোকদ্দমা, স্বত্ব সাব্যস্ত পূর্বক খাস দখল, উৎখাত ও প্রিয়েমশান ইত্যাদি মোকদ্দমায় ডিক্রির পর আদালত হতে বন্টনের মোকদ্দমায় কমিশনার ও অন্যান্য মোকদ্দমায় আদালতের পদাতিক বা নায়েব, নাজির যোগে ডিক্রির দখলী পরওয়ানের ভিত্তিতে দখল গ্রহণ করতে হয় এবং দখল দেওয়ার পর কমিশনার ও আদালতের পদাতিক বা নায়েব নাজির রিপোর্টসহ উক্ত দখলী পরওয়ানা আদালতে দাখিল করেন। তাকে দখলনামা দলিল বলা হয়।

🏕 রায় দলিল কাকে বলে?

কোন সম্পত্তি টাকা পয়সা কিংবা অন্যান্য যে কোন কারণে আদালতে নালিশ হলে বাদীর আরজি, বিবাদীর জবাব দৃষ্টে সাক্ষী প্রমাণ গ্রহণ করে একতরফা বা দোতরফা শুনানীর পর হাকিম বিচার করে উক্ত বিচার লিখিতভাবে জানিয়ে দেন তাকে,রায় দলিল বলে।

🏕 ডিক্রি দলিল কাকে বলে?

আদালতের রায়ের আদেশাংশ সংযোজন করে বাদী ও বিবাদী পক্ষের নাম ঠিকানাসহ সম্পত্তি সংক্রান্ত হলে সম্পত্তির তফসিল পরিচয়সহ যে দলিল আদালত কর্তৃক জারী করা হয় তাকে ডিক্রি বলে।

🏕 আরজি দলিল কাকে বলে?

বাদী বিরোধীয় ভূমির জন্য বিবাদীগণের বিরুদ্ধে আদালতে যে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন তাকে আরজি বলা হয়। এই আরজিতে বাদী তার স্বত্ব সম্বন্ধে যাবতীয় বিবরণ লিপিবদ্ধ করেন এবং প্রতিকার প্রার্থনা করেন। কিছু অ্যাপ্লিকেশন আরজি হিসাবে বিবেচিত হয়। যেমন প্রাইমশান গার্ডিয়ান নিয়োগের আবেদন, উত্তরাধিকার সার্টিফিকেট, ইত্যাদি।

🏕 আদালত যোগে সাফকবলা দলিল কাকে বলে?

যদি কোন ব্যক্তি তার সম্পত্তি বিক্রি করার উদ্দেশ্যে কারোও নিকট হতে বায়না বাবদ টাকা গ্রহণ করে ও বায়নাপত্র সম্পাদন করে। এবং পরবর্তিতে যদি দলিল সম্পাদন বা রেজিষ্ট্রী করে দিতে না চায়, তাহলে যে ব্যক্তি ক্রয়ের উদ্দেশ্যে বায়না দিয়েছেন তিনি আদালতের শরণাপন্ন হয়ে নালিশ করে আদালত কর্তৃক দলিল সম্পাদন ও রেজিষ্ট্রী করিয়ে নিতে পারবেন।

আদালতের বিচারে দলিল সম্পাদনের মোকদ্দমা ডিক্রি জারি হলে, উক্ত ডিক্রি ঐ আদালতে জারী দিয়ে দলিলের মুসাবিদা ও ষ্ট্যাম্প আদালতে দাখিল করলে, তম্মর্মে দলিল লিখে আদালত দাতার কাছে দস্তখত করে দলিল রেজিষ্ট্রী করে দিবেন।

🏕 বায়নাপত্র দলিল কাকে বলে?

কোন সম্পত্তি বিক্রয়ের জন্য ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে যে চুক্তিপত্র সম্পাদন করা হয় তাকে বায়নাপত্র বলে। বর্তমানে বায়না দলিল রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক। বায়না পত্রের মাদ্যমেও স্বত্ব হস্তান্তরিত হতে পারে।

যদি কোন ব্যক্তি বায়নাপত্র মারফত জমির দখল বুঝিয়ে দিয়ে থাকেন এবং মূল্যের টাকা গ্রহণ করে থাকেন এবং বিশেষ কারণে দলিল সম্পাদন ও রেজিষ্ট্রী করে দেন নাই বা দিতে পারেন নাই।

যেহেতু দখল বুঝিয়ে দিয়েছেন এবং গ্রহীতা দখল বুঝিয়ে নিয়ে ভোগ দখল করছেন সেহেতু সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ধারা মতে আংশিক বিক্রয় কার্যকরী হয়েছে। অতএব জমিতে খরিদ্দারের স্বত্ব হয়েছে বলে গণ্য হবে।

🏕 বেনামী দলিল কাকে বলে?

কোন ব্যক্তি বিশেষ কোন কারণে তার নিজের নামে সম্পত্তি খরিদ করতে অসুবিধার সম্মুখীন হওয়া বিবেচিত হলে ঐ ব্যক্তি নিজ অর্থে ও স্বার্থে সম্পত্তি খরিদ করে তার দলিল নিজের নামে না করে তার যে কোন আত্মীয়ের বা বিশ্বাসী বন্ধু বান্ধবের নামে বেনামী দলিল করতে পারেন বা নিজের সম্পত্তি ঋণের দায়ে বা অন্য কোন কারণে নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে ঐ ব্যক্তি তার নিজের সম্পত্তি কোন আত্মীয় স্বজন বা বন্ধু বান্ধবের নামে দলিল করে দিতে পারেন। সেই দলিল অবশ্যই সাফকবালা ক্ষেত্র বিশেষে দানপত্র দলিল হবে।

🏕 খতিয়ান কাকে বলে ?

ভূমি জরিপকালে ভূমি মালিকদেল মালিকানা ও জমি সংক্রান্ত বিস্তারিত যে বিবরণ প্রস্তুত করা হয় তাকে “খতিয়ান” বলে।“খতিয়ান” রেডি করা হয় নিজ নিজ মৌজা ভিত্তিক।

আমাদের দেশে SA, CS, RS, এবং সিটি জরিপ এখন পর্যন্ত সম্পন্ন হয়েছে। এসব জরিপরে সময় ভূমি ও ভুমি মালিকের তথ্য প্রস্তত করা হয়েছে তাকে “খতিয়ান” বলা হয়। যেমন BS খতিয়ান, CS খতিয়ান, RS খতিয়ান ইত্যাদি।

🏕 দাগ নাম্বার কাকে বলে ?

যখন জরিপ ম্যাপ প্রস্তুত করা হয় তখন মৌজা নক্সায় ভূমির সীমানা চিহ্নিত বা সনাক্ত করার লক্ষ্যে প্রত্যেকটি ভূমি খন্ডকে আলাদা আলাদ নাম্বার দেয়া হয়। আর এই নাম্বারকে দাগ নাম্বার বলে।

একেক নাম্বারে বিভিন্ন পরিমাণ ভূমি থাকতে পারে। মূলত, নাম্বার অনুসারে একটি মৌজার অধীনে ভূমি মালিকের সীমানা খূটিঁ বা আইল দিয়ে প্রর্দশন করা হয়।

🏕 ছুটা দাগ কাকে বলে ?

ভূমি জরিপকালে প্রাথমিক অবস্থায় নকশা প্রস্তুত অথবা সংশোধনের সময় নকশার প্রতিটি ভূমি এককে যে নাম্বার দেওয়া হয় সে সময় যদি কোন নাম্বার ভুলে বাদ পড়ে তাবে ছুটা বলে।

আবার প্রাথমিক পর্যায়ে যদি দুটি একত্র করে নকশা পূনরায় সংশোধন করে দেওয়া হয় তখন যে নাম্বার বাদ পরে তাকেও ছুটা দাগ বলে।

🏕 পর্চা কাকে বলে ?

ভূমি জরিপকালে চূড়ান্ত প্রস্তত করার পূর্বে ভূমি মালিকদের নিকট খসড়া খতিয়ানের যে হাতে লেখা অনুলিপি ভুমি মালিকদের প্রদান করা হয় তাকে “মাঠ পর্চা” বলে।

এই মাঠ পর্চা রেভিনিউ/রাজস্ব কর্তৃক তসদিব বা সত্যায়ন হওয়ার পর যদি কারো কোন আপত্তি থাকে তাহলে তা শোনানির পর চুড়ান্তভাবে প্রকাশ করা হয়। আর চুড়ান্ত খতিয়ানের অনুলিপিকে “পর্চা”বলে।

🏕 নামজারী কাকে বলে ?

ক্রয়/উত্তরাধিকার বা অন্য কোনো সূত্রে জমির নতুন মালিক হলে, সরকারি খতিয়ানে নতুন মালিকের নাম নথিভুক্ত করার প্রক্রিয়াকে নামজারি বলে।

🏕 জমা খারিজ কাকে বলে ?

যৌথ জমা বিভক্ত করে আলাদা করে নতুন সৃষ্টি করাকে জমা খারিজ বলে। অন্য কথায় মূল থেকে কিছু জমির অংশ নিয়ে নতুন জোত বা সৃষ্টি করাকে জমা খারিজ বলে।

🏕 মৌজা কাকে বলে ?

যখন CS জরিপ করা হয় তখন থানা ভিত্তিক এক বা একাধিক গ্রাম, ইউনিয়ন, পাড়া, মহল্লা আলাদা করে বিভিন্ন এককে ভাগ করে ক্রমিক নাম্বার দিয়ে চিহ্নিত করা হয়। আর বিভক্তকৃত এই প্রত্যেকটি একককে মৌজা বলে।

🏕 তফসিল কাকে বলে ?

যে বিবরণ গুলি জমির পরিচয় বহন করে তাকে “তফসিল” বলা হয়। তফসিলে মূলত মৌজার নাম ও নম্বর, খতিয়ান নম্বর, জমির সীমানা, জমির পরিমাণ ইত্যাদি তথ্য থাকে।

🏕 আমিন কাকে বলে ?

আমিন হলেন সেই কর্মচারী যিনি ভূমি জরিপের মাধ্যমে নকশা প্রস্তুত করেন এবং ভূমি জরিপের কাজে নিয়োজিত থাকেন।

🏕 খাজনা কাকে বলে?

জমিদাররা জমি ব্যবহারের জন্য দেশের সরকার বার্ষিক ভিত্তিতে বা প্রতি বছর প্রজাদের অথাৎ জমিদার দের কাছ থেকে যে কর বা পাওনা আদায় করে তাকে খাজনা বলে।

🏕 দাখিলা কাকে বলে ?

ভূমি কর/খাজনা আদায়ের প্রমাণ বা যে রশিদ দেওয়া হয় তাকে দাখিলা বলা হয়। নির্ধারিত ফর্ম এর মাধ্যমে কর/খাজনা আদায় করা হয়।

🏕 DCR কাকে বলে ?

ভূমি কর ব্যতীত অন্যান্য সরকারী খাজনা বা বকেয়া আদায়ের পর জারি করা রসিদকে ডিসিআর বলে। নির্ধারিত ফর্ম এর মাধ্যমে DCR আদায় করা হয়।

🏕 কবুলিয়ত কাকে বলে ?

সরকার কর্তৃক কৃষককে ভূমি বন্দোবস্তের প্রস্তাব প্রাজা গ্রহণ করে এবং প্রজাদের থেকে খাজনা গ্রহণকে গ্রহণের পর যে অঙ্গিকার পত্র দেওয়া হয় তাকে কবুলিয়ত বলে।

কৃষকরা তাদের অধিকার ও দায়িত্ব উল্লেখ করে কবুলিয়ত নামে একটি দলিল সম্পাদন করত। অন্যদিকে সরকারের পক্ষ থেকে কৃষকদের অধিকার স্বীকার করে জমি লিজ দেওয়া হয়।

এই নীতির ফলে স্বল্প সময়ে সরকারের রাজস্ব ও রাষ্ট্রীয় সম্পদের পরিমাণ অনেক বেড়ে যায়। এর ফলে রাজ্যের কৃষকরাও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা পায়।

🏕 নাল জমি কাকে বলে ?

২/৩ ফসলি সমতল জমি গুলোকে নাল জমি নামে পরিচিত বা নাল জমি বলা হয়।

🏕 খাস জমি কাকে বলে ?

যে জমিগুলো সাধারণত সরাসরি সরকারের মালিকানাধীন থাকে বা সরকারের ভূমি মন্ত্রনালয়ের আওতাধিন থাকে সেগুলোই মূলত খাস জমি হিসেবে পরিচিত। অর্থাৎ যে জমিগুলো কালেক্টরের নামে রেকর্ড থাকে সেগুলোই খাস জমি বা খাস জমি বলা হয়। জমি অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন প্রণয়নের পর জমিদারি উচ্ছেদ করা হয়। এই আইন জমিদারদের একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ জমি তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখার এবং অবশিষ্ট জমি সরকারের কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ দেয়।

এই জমিগুলি পরে কালেক্টরের ১ম খতিয়ান বা ১ম খাস খতিয়ানে স্থানান্তরিত হয়। ১ম খতিয়ানে থাকা সরকারী জমিকেই খাস জমি বলে।

🏕 চান্দিনা ভিটি কাকে বলে ?

মার্কেট হাট বাজারের অস্থায়ী বা স্থায়ী অকৃষি জমির যেই অংশ গুলো প্রজার কাছে বরাদ্ধ দেওয়া হয় তাকে চান্দিনা ভিটি বলে।

🏕 ওয়াকফ কাকে বলে ?

ওয়াকফ বলতে, যেকোন মানুষ কর্তৃক ধর্মীয়, পবিত্র বা দাতব্য কাজের উদ্দেশ্যে তার স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি স্থায়ীভাবে উৎসর্গ করাকে বুঝায়। বিধান অনুযায়ী কোন ভূমি তার মালিক কর্তৃক ধর্মীয়  ও সমাজ কল্যাণমূলক যেমন মন্দির,মসজিদ বা যে কোন ধর্মীয় স্থান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যয় নির্বাহ, হাসপাতাল নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ, গরীবদের সাহায্য করা, মানুষকে উন্নতি তে সাহায্য করা ইত্যাদি উদ্দেশ্যে সম্পত্তি দান করাকে ওয়াকফ বলা হয়।

🏕 মোতয়াল্লী কাকে বলে?

যিনি ওয়াকফ সম্পত্তির ব্যবস্থাপনা ও তত্ত্বাবধান করেন তাকে মোতওয়ালি বলা হয়। মোতওয়াল্লী ওয়াকফ প্রশাসকের অনুমতি ছাড়া ওয়াকফ সম্পত্তি হস্তান্তর করতে পারবেন না।

🏕 দেবোত্তর সম্পত্তি কাকে বলে ?

হিন্দুধর্ম মতে, ধর্মীয় কাজের জন্য উৎসর্গকৃত ভূমিকে দেবোত্তর সম্পত্তি বলে।

🏕 ফারায়েজ কাকে বলে ?

ইসলামি বিধান অনুযায়ী মুসলিম মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি বন্টন বা ভাগ বাটোরা করার নিয়ম বা প্রক্রিয়াকে ফারায়েজ বলে।

🏕 ওয়ারিশ কাকে বলে ?

ওয়ারিশ অর্থ উত্তরাধিকারী। ধর্মীয় বিধানের অনুয়ায়ী কোন ব্যক্তি উইল না করে মৃত্যু বরণ করলে তার স্ত্রী, সন্তান বা নিকট আত্মীয়দের মধ্যে যারা তার রেখে যাওয়া সম্পত্তিতে মালিক হওয়ার যোগ্যতা সম্পন্ন এমন ব্যক্তি বা ব্যক্তিগণকে ওয়ারিশ বলে।

🏕 সিকস্তি কাকে বলে ?

নদীভাঙনের ফলে যে জমি নদীগর্ভে হারিয়ে যায় তাকে সিকান্তি বলে। যদি সিকান্তি জমি ৩০ বছরের মধ্যে চর বা পলি পরে স্থান পায়, তাহলে সেই ব্যক্তি যিনি সিকান্তির আগে জমির মালিক ছিলেন তিনি বা তার উত্তরাধিকারীরা শর্ত সাপেক্ষে জমির মালিকানার অধিকারী হবেন।

🏕 পয়ন্তি কাকে বলে ?

নদীর তলদেশ বা জলের পলি দ্বারা ভেসে উঠা গঠিত জমিকে পয়ন্তী ভূমি বা পয়ন্তী বলে।

🏕 কিস্তোয়ার কী ?

ভূমিজরিপকালে চতুর্ভূজ ও মোরব্বা প্রস্তুত করারপর সিকমি লাইনে চেইন চালিয়ে সঠিকভাবে খন্ড খন্ড ভূমির বাস্তব ভৌগলিক চিত্র অঙ্কনের মাধ্যমে নক্সাপ্রস্তুতের পদ্ধতিকে কিস্তোয়ার বলে।

🏕 খানাপুরি কী ?

জরিপের সময় মৌজা নক্সা প্রস্তুত করার পর খতিয়ান প্রস্তুতকালে খতিয়ান ফর্মের প্রত্যেকটি অংশ জরিপ কর্মচারী কর্তৃক পূরণ করার প্রক্রিয়াকে খানাপুরি বলে।

🏕 হোল্ডিং নম্বর কি?

 একটি খতিয়ানে একটি দাগ থাকতে পারে, আবার একাধিক দাগও থাকতে পারে। এ রকম একটি খতিয়ানের অন্তর্ভুক্ত ভূমিকে হোল্ডিং বা জোত-জমা বলে। হোল্ডিংয়ের পরিচিত নম্বরকে হোল্ডিং নম্বর বলে।

🙏 প্রিয়পাঠকগন,

আমাদের পোস্ট পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, আশা করছি আজকের পোস্টে আপনি জমি জমা সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য পেয়েছেন। এছাড়াও আমাদের জমি জমা বিষয়ে আরও অনেক প্রয়োজনীয় পোস্ট  রয়েছে যা থেকে আরও অনেক কিছু জানতে পারবেন। কিছু তথ্য ভুল হইলে দয়া করে আমাদের জানান আমরা তাড়তাড়ি সংশোধন করবো।

Thank you, Please visit again.

Post a Comment

0 Comments